জান্নাতের সার্টিফিকেট প্রাপ্ত সাহাবী হযরত তালহা(রাঃ)ও তার স্ত্রীর কাহিনী।
হযরত তালহা (রা:) প্রতিদিন নবীজীর পেছনে ফজরের নামাজ পড়েন। কিন্তু নামাজে সালাম ফিরানোর সাথে সাথে তিনি মসজিদে না বসে তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে যান। এভাবে কয়েকদিন চলার পর অন্যান্য সাহাবিরা এটা নিয়ে আলোচনা শুরু করলেন যে, প্রতিদিন সালাম ফিরিয়েই তালহা চলে যান। অথচ নবীজী (সা:) ফজরের পর সূর্য উদয় না হওয়া পর্যন্ত মসজিদে বসে বয়ান করেন। অন্যান্য সব সাহাবিরাও রাসূলের (সাঃ) কাছে বসে থাকেন। এক পর্যায়ে এই কথা নবীজীর কানে পৌছালো। নবীজী সাহাবিদের বললেন, “আগামিকাল ফজরের নামাজ শেষে তালহা যেন আমার সাথে দেখা
করে।” পরের দিন নামাজে আসলে তালহাকে একথা জানিয়ে দেয়া হল।
ফজরের নামাজ শেষ। তালহা বসে আছেন নবীজীর সাথে দেখা করার জন্য। একপর্যায়ে নবীজী তালহাকে ডাকলেন। নবীজী অতি মোলায়েম কন্ঠে তালহাকে বললেন, “তালহা! আমি কি তোমাকে কোন কষ্ট দিয়েছি? আমি কি তোমার কোন হক নষ্ট করেছি?” একথা শুনে তালহা (রাঃ) কেঁদে ফেললেন এবং বললেন, “হে আল্লাহর রাসুল (সা:)! আমার জীবন আপনার জন্য উৎসর্গ হোক। আপনি আমার কোন হক নষ্ট করেননি।”
নবীজী (সা:) বললেন, “তাহলে তালহা! তুমি প্রতিদিন নামাজ শেষে আমার কাছে না বসে চলে যাও কেন?”
তালহা (রাঃ) কেঁদে কেঁদে বললেন, ” ইয়া রাসুল (সা:)! আমার এবং আমার স্ত্রীর সতর ডাকার জন্য একটি মাত্র জামা আছে। যেটা পরে আমি যখন নামাজ পড়ি তখন আমার স্ত্রী তখন উলংগ থাকেন। স্ত্রী
যখন নামাজ পড়েন আমি তখন উলংগ থাকি। এক্ষেত্রে ফজরের নামাজের সময় একটু অসুবিধা হয়ে যায় ইয়া আল্লাহর রাসুল (সা:)। ফজরের নামাজে আসার সময় আমি আমার স্ত্রীকে একটা গুহায় রেখে আসি। এমতাবস্থায় আমি যদি নামাজ শেষে এখানে বসে থাকি তাহলে তো আমার স্ত্রীর নামাজটা কাজা হয়ে যাবে ইয়া আল্লাহর রাসূল। এজন্য আমি নামাজ শেষে দৌড়ে চলে যাই।”
তালহার (রাঃ) কথা শুনে আল্লাহর রাসুল (সাঃ) দরদর করে কেঁদে ফেলেন।
নবীজীর দাড়ি বেয়ে বেয়ে চোখের পানি পড়তেছে। সাথে সাথে নবীজী তালহাকে জানিয়ে দিলেন, “তালহারে! নিশ্চয়ই তুমি জান্নাতে যাবে।” আল্লাহু আকবার।
(কাহিনী টি মুসনাদে আহমদে বর্ণিত হয়েছে)
একবার চিন্তা করুন,
আমাদের তো কাপড়ের অভাব নেই, এরপরে’ও নামাযের প্রতি কোনো টানের চেষ্টা নেই।
হে আল্লাহ আপনি, আমাদের সকলকে নামাজ পড়ার তৌফিক দান করুন। (আমীন)
জান্নাতের সার্টিফিকেট প্রাপ্ত সাহাবী ও তার স্ত্রীর গল্পটি পড়ে আপনার কেমল লাগল