একজন রাজা কেমন হওয়া উচিত তা আমরা এই গল্প থেকে শিখতে পারি। একটি রাজা প্রজার গল্প টিতে আমরা তা তুলে ধরব। রাজা প্রজার গল্প বর্তমান পেক্ষাপটে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে আমাদের প্রতিক্রিয়া যেন এমন।
সুখি রাজ্যের রাজা প্রজার গল্প
এক বানিয়া বাজারে পাঁচ টাকা দামে রুটি বিক্রি করতো।
সে তার রুটির দাম বাড়াতে চাইতো, কিন্তু রাজার অনুমতি ছাড়া তখন কোনও দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি দণ্ডণীয় অপরাধ ছিলো।
একদিন, সেই বানিয়া রাজার সঙ্গে দেখা করে বললো – মহারাজ, আমি এই আয় দিয়ে পরিবার প্রতিপালনে অক্ষম, আমি তাই আমার রুটির দাম বাড়িয়ে ১০ টাকা করতে চাই।
রাজা বললেন – তুমি তোমার রুটির দাম ১০ টাকা নয়, ৩০ টাকা করে দাও।
বানিয়া বললো – মহারাজ, এতে তো রাজ্যে হাহাকার শুরু হয়ে যাবে ?
রাজা বললেন – এই চিন্তা তোমাকে করতে হবে না, তুমি তোমার ফায়দার চিন্তা করো, তুমি এখন থেকে ৩০ টাকা করে রুটি বেচবে।
রাজার কথায় বানিয়া পরদিন থেকেই তার রুটির দাম বাড়িয়ে ৩০ টাকা করে দিলো।
সারা শহরে হাহাকার দেখা দিলো। সবাই রাজার কাছে অভিযোগ জানাতে ছুটে এলো – মহারাজ, এই বানিয়া তো রাজ্যবাসীর উপর অত্যাচার শুরু করেছে, পাঁচ টাকার রুটি ত্রিশ টাকায় বিক্রি করছে।
রাজা সিপাহীকে আদেশ দিলেন – এই দুষ্কৃতী বানিয়াকে রাজ দরবারে ধরে নিয়ে এসো।
বানিয়া যেই এসে রাজ দরবারে উপস্থিত হলো, রাজা হুংকার দিয়ে উঠলেন – শালা হারামখোর, তোর এতো বড় সাহস, আমার বিনা অনুমতিতে তুই দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি করিস। এরা আমার প্রজা, তুই কি এদেরকে উপোস করিয়ে মেরে ফেলতে চাস ?
রাজা তখনই বানিয়াকে আদেশ দিলেন – কাল থেকে তুই রুটি আধা দামে বিক্রি করবি, নইলে আমি তোকে শূলে চড়াবো।
রাজার আদেশ শুনেই প্রজারা “জয় মহারাজের জয়” ধ্বনিতে আকাশ বাতাস মুখরিত করে তুললো।
এখন প্রতিক্রিয়া দেখুন, রাজার আদেশে পাঁচ টাকার রুটি ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রজারা খুশি আর বানিয়া তো মহাখুশি।
এখানেই শেষ নয়। পরদিন রাজা বানিয়াকে চুপিচুপি ডেকে পাঠালেন। বানিয়া আসতেই রাজা বললেন, “তোমাকে কাল সর্বসমক্ষে গালাগালি, তুই তোকারি করেছি, কিছু মনে করো না। আর হ্যাঁ, তোমার তো রুটির দাম দশ টাকা পেলেই চলবে বলেছো, তাই ওই অতিরিক্ত পাঁচ টাকাগুলো রোজ তুমি আমাকে দিয়ে যাবে।
আমাদের বর্তমান পেক্ষাপট যেন এমন হয়ে গেছে। আমরা সুখি রাজ্যের রাজা প্রজার গল্প এর মত চলছি॥ পন্যের দাম বৃদ্ধিতে আমাদের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই।