ভূ-চৌম্বকীয় ঝড় কি ক্ষতিকর

পৃথিবীতে ৩০শে অক্টোবরের রাতে জিওম্যাগনেটিক বা ভূচৌম্বকীয় ঝড় আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। গত বৃহস্পতিবার সূর্য থেকে কয়েক মিলিয়ন টন আয়নযুক্ত গ্যাস নির্গত হওয়ার পর এমন ধারণা করা হয়। এ ধরনের ঝড়ে মানুষের ক্ষতি হয় না, তবে প্রভাব ফেলতে পারে যোগাযোগের অবকাঠামোতে। এবার অবশ্য তেমন বড় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কাও করছেন না বিশেষজ্ঞরা।

ভূ-চৌম্বকীয় ঝড় কী

সূর্য এবং পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মধ্যে তীব্র সৌরশক্তির বিনিময় বলা চলে, তবে সেটা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সর্বশেষ স্তর ম্যাগনেটোস্ফিয়ারে বড় বাধা তৈরি করে। এতে বেতার তরঙ্গের সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়।

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানায়, সে ঝড় প্রভাব ফেলতে পারে পৃথিবীর জিপিএস সংকেত, স্যাটেলাইট-নির্ভর যোগাযোগ এবং বিদ্যুতের গ্রিডে। সে সঙ্গে জিওম্যাগনেটিক অ্যাকটিভিটির প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের হাডসন ভ্যালিতে অরোরা (মেরুপ্রভা) দৃশ্যমান হতে পারে।

সোলার ফ্লেয়ার বা সৌরশিখা কি এর শ্রেণীবিভাগ

সূর্য থেকে শক্তিশালী তেজস্ক্রিয় বিকিরণকে সোলার ফ্লেয়ার বা সৌরশিখা বলা হয়। ২৮ অক্টোবর ২০২১ তারিখ ‘এক্স১’ শ্রেণির এমন শিখা নির্গত হয়েছে বলে ধরা পড়ে নাসার সোলার ডাইনামিকস অবজারভেটরিতে। সবচেয়ে তীব্র সৌরশিখার ক্ষেত্রে ‘এক্স’ শ্রেণির উল্লেখ করে থাকে নাসা। সঙ্গে থাকা নম্বরটি বোঝায় তীব্রতা। যেমন এক্স১-এর চেয়ে এক্স২ ও এক্স৩ যথাক্রমে দ্বিগুণ ও তিন গুণ শক্তির।

যুক্তরাষ্ট্রের স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টারের (এসডব্লিউপিসি) বিশ্লেষণে দেখা যায়, সূর্য থেকে সৌরশিখা নির্গত হয় সেকেন্ডে ৯৭৩ কিলোমিটার বেগে। সে অনুযায়ী ধারণা করা হচ্ছে, আজ শনিবার রাতে এসে তার প্রভাব পৌঁছাবে পৃথিবীতে, যা পরদিনও কার্যকর থাকতে পারে।

২৮ অক্টোবর নির্গত সৌরশিখায় ‘রেডিও ব্ল্যাকআউট’ হয়, যা কিছু উচ্চতরঙ্গের বেতার সম্প্রচার এবং নিম্নতরঙ্গের নেভিগেশন ব্যবস্থায় প্রভাব ফেলতে পারে।

ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়

স্পেসওয়েদার ডটকমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবারের সৌরশিখার উৎপত্তি ‘এআর২৮৮৭’ নামের সৌরকলঙ্ক থেকে, যেটি বর্তমানে সূর্যের মাঝামাঝি এবং পৃথিবীর দিকে মুখ করে আছে। সূর্যের পৃষ্ঠের দাগ হলো সৌরকলঙ্ক।

ভূ-চৌম্বকীয় ঝড় এর প্রভাব

সৌরশিখার ক্ষতিকর তেজস্ক্রিয় কণা পৃথিবীর পরিমণ্ডল ভেদ করে মানুষের ক্ষতি করতে পারে না। তবে বায়ুমণ্ডলের যে স্তরে জিপিএস এবং যোগাযোগের তরঙ্গ প্রবাহিত হয়, সে স্থানে আঘাত করে।

তীব্র এই সৌরশিখা সরাসরি পৃথিবীর দিকে ধেয়ে এলে সঙ্গে আসতে পারে সৌরকণা, যা ‘করোনাল মাস ইজেকশন’ হিসেবে পরিচিত। যুক্তরাষ্ট্রের স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ২৮ অক্টোবর ২০২১ এক্স১ শ্রেণির সৌরশিখার সঙ্গে করোনাল মাস ইজেকশনের লক্ষণও দেখা যাচ্ছে। তবে এসডব্লিউপিসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এবারের সৌরঝড়ের প্রভাব ন্যূনতম হওয়ার কথা।

পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রে সৌরঝড় আঘাত করলে প্রায় ক্ষেত্রে গোলার্ধগুলোতে অরোরা দেখা যায়। উত্তর গোলার্ধে হলে সেটাকে নর্দার্ন লাইটস বলা হয়। অরোরা অনেকটা রঙিন ফিতার মতো দেখায়।

পাঁচটি ধাপের মধ্যে এবারের সৌরঝড় ‘জি৩’ পর্যায়ের, এর চেয়ে কম হলে বিদ্যুতের গ্রিড অপারেটরদের জন্য শঙ্কার কারণ হতো বলে জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।

ক্যান্সারের লক্ষণ: কিছু অস্পষ্ট লক্ষণ জেনে নিন আর সতর্ক হোন আজই

মেটা কোম্পানি: ফেসবুক এখন এই কোম্পানির একটি প্রতিষ্ঠান

South Korea is preparing to test a home-made space rocket for the first time